গোপালগঞ্জে এনসিপির নেতৃবৃন্দের উপর হামলার প্রতিবাদে মিরপুরে জামায়াতের মিছিল
গোপালগঞ্জে এনসিপির নেতৃবৃন্দের উপর হামলার প্রতিবাদে মিরপুরে জামায়াতের মিছিল
নিজস্ব প্রতিবেদক : গোপালগঞ্জে এনসিপির নেতৃবৃন্দের উপর হামলার প্রতিবাদে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী উত্তরের উদ্যোগে তাৎক্ষণিক বিক্ষোভ মিরপুরে আজ সন্ধ্যা ৬টায় অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহি পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমীর মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিনের নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত বিক্ষোভে উপস্থিত ছিলেন, কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও মহানগরীর সহকারী সেক্রেটারি ডা.ফখরুদ্দিন মানিক, জিয়াউল হাসান, ইঞ্জিনিয়ার কাজী আবিদ হাসান সিদ্দীকি, ডা. আসাদুজ্জামান কাবুল, শাহ আলম তুহিন প্রমুখ।
মিছিল শেষে সভাপতির বক্তব্যে মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন বলেন, সরকার ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের উপর্যুপরি ব্যর্থতার কারণেই গোপালগঞ্জ রক্তাক্ত হয়েছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয় সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার না করায় পতিতরা এ ধরনের ন্যাক্কারজনক ঘটনা ঘটানোর দুঃসাহস দেখিয়েছে। তাই আগামী ২৪ ঘন্টার মধ্যেই গোপালগঞ্জের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে কার্যকর পদক্ষে গ্রহণ করতে হবে। অন্যথায় সারাদেশে দাবালন জ্বলে উঠবে। জামায়াতের পেশাজীবি দায়িত্বশীল সমাবেশ ২৪ ঘন্টার মধ্যে গোপালগঞ্জ পরিস্থিতি স্বাভাবিক না করে সারাদেশে দাবানল জ¦লে উঠবে-মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন।
সংখ্যাগরিষ্ঠ রাজনৈতিক দলের মতামতের ভিত্তিতে অথবা গণভোটের মাধ্যমে আগামী দিনের নির্বাচন পদ্ধতির বিষয়টি ফয়সালা করতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহবান জানিয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমীর মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন।
তিনি আজ রাজধানীর মিরপুরের পুলিশ কনভেনশন হলে পেশাজীবি জোন জামায়াতের দায়িত্বশীলদের সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের নায়েবে আমীর, পেশাজীবি জোনের পরিচালক আব্দুর রহমান মুসার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উক্ত সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, মহানগরীর কর্মপরিষদ সদস্য মুফতি মাওলানা ড.আবুল কালাম আজাদ বাশার,মহানগরীর কর্মপরিষদ সদস্য, ইঞ্জিনিয়ার্স ফোরামের আমীর ইঞ্জিনিয়ার আবিদ হাসান সিদ্দিকী, ডা. আসাদুজ্জামান কাবুল।
মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন বলেন, ১৯ জুলাই আমরা এমন এক উচ্চমানের কার্যকরি জাতীয় সমাবেশ করতে চাই, যে সমাবেশের মাধ্যমে সাধারণ মানুষের মধ্যে আস্থার সংকট দূর হবে। অতীতে যারা ক্ষমতায় ছিলেন তারা জনগণের সাথে ওয়াদা ভঙ্গ, দুর্নীতি-দুঃশাসন, লুটপাট, অর্থপাচার, চাঁদাবাজী, টেন্ডারবাজী, খুন, ধর্ষণ ও মানুষের অধিকার হরণ ছাড়া কিছুই দিতে পারেনি।
তাই জুলাই বিপ্লবের মাধ্যমে তাদের পতন হয়েছে। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে যারা ক্ষমতায় যাওয়ার স্বপ্ন দেখছেন, অতিউচ্চাভিলাষী ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল না হওয়ায় তারাও ইতোমধ্যেই জনগণের আস্থা হারাতে শুরু করেছেন। তাদের মন-মানসিকতার ইতিবাচক পরিবর্তন হওয়া জরুরি হলেও তারা এখনো অতীতের অশুভ বৃত্তেই রয়ে গেছেন। ফলে জনগণের ভোট পাওয়ার জন্য তাদের যে মানদণ্ড ও যোগ্যতা থাকা দরকার তারা ইতোমধ্যেই তা হারিয়ে ফেলেছেন।
তাদের দলের কর্মীরা এখন চাঁদাবাজী সহ বিভিন্ন অপরাধে জড়িয়ে পড়েছেন। চাঁদা না দেওয়ার মানুষকে জীবন দিতে হচ্ছে। ৯ তারিখের মিটফোর্ডের নির্মম হত্যাকাণ্ডের ঘটনা তার জলন্ত প্রমাণ। আর এ ঘটনার প্রভাব আগামী নির্বাচনে অবশ্যই পড়বে। তিনি সময় থাকতে শুভবুদ্ধির পরিচয় দিয়ে সংশ্লিষ্টদের ইতিবাচক রাজনীতিতে ফিরে আসার আহবান জানান। অন্যথায় তাদেরকে পতিতদের ভাগ্য বরণ করতে হবে।
তিনি বলেন, পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে মানুষের মধ্যে ভাবান্তর এসেছে। মানুষ এখন বিকল্প শক্তির সন্ধান করছে। তারা এখন জামায়াতে ইসলামীকেই বিশেষভাবে গুরুত্ব দিচ্ছে। মূলত, জামায়াত এদেশের প্রাচীন, আদর্শবাদী, গণতান্ত্রিক, দায়িত্বশীল ও গণমুখী রাজনৈতিক দল। আমরা দেশ ও জাতির যেকোনে ক্রান্তিকালে মানুষের পাশে থাকার চেষ্টা করেছি। আমাদের কর্মীদের আমরা ১২ মাসই নৈতিক শিক্ষা দিয়ে থাকি। দায়িত্ব ও নেতৃত্বদানের উপযোগী করে গড়ে তুলি। সততা ও আমানতদারীতা আমাদের রাজনীতির মূলধন।
তিনি দেশের রাজনীতির গুণগত পরিবর্তন প্রসঙ্গে বলেন, দেশ ও জাতির বৃহত্তর স্বার্থেই দেশে রাজনীতির গুণগত পরিবর্তন আনতে হবে। এজন্য পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন হওয়া দরকার। বিশ্বের ৯২ টি দেশের এ পদ্ধতির নির্বাচন চালু আছে। এ পদ্ধতির নির্বাচন চালু হলে দেশে হুন্ডা, গুণ্ডা, সন্ত্রাস, নৈরাজ্য, ব্যালট বাক্স ছিনতাই ও কেন্দ্র দখল বন্ধ হবে। কিন্তু একটি পক্ষ তা চায় না। কারণ, তারা মনোনয়ন বাণিজ্যে অভ্যস্ত।
মহানগরী উত্তর আমীর বলেন, প্রশাসনে নতুন করে দলবাজী শুরু হয়েছে। এদের ঘাড়ে ফ্যাসীবাদের ভুত চেপেছে। মিটফোর্ড হত্যাকাণ্ডের দায় দলীয়ভাবে স্বীকার করে কর্মীদের বহিস্কার করা হলেও পুলিশ প্রশাসন তাদের রাজনৈতিক পরিচয় খুঁজে পাচ্ছে না।
মূলত, এরা দলবাজ। এদেরকে নির্বাচনী দায়িত্বে রেখে কোন ভাবেই অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন সম্ভব নয়। আর যারা দায়িত্ব পালনে দলবাজী বা পক্ষপাতিত্ব করে মূলত এরা রাষ্ট্রোদোহী। এদের বিরুদ্ধে অন্তর্বর্তী সরকারকে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। তাদের বাধ্যতামূলক অবসর সহ অবসরকালীন আর্থিক সুবিধা স্থগিত করা দরকার। অন্যথায় জনগণই এসব দলদাসদের বিরুদ্ধে তীব্র গণপ্রতিরোধ গড়ে তুলবে।
নিউজটি আপডেট করেছেন : Banglar Alo News Admin
কমেন্ট বক্স